শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বিএনপি চাঙা, সুযোগ নিচ্ছে সুবিধাবাদীরা  

 লতিফ রানা

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২২  


# অতীতের ভূমিকা অনুযায়ী তারা মূল্যায়িত হবে বলে আশা করি : এড. সাখাওয়াত

# এখন আমাদের দল শতভাগ সুসংগঠিত : মমতাজ উদ্দিন মন্তু


 
প্রায় দেড়যুগের কাছাকাছি সময় হয় ক্ষমতার বাইরে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি। রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত দলটি যত ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যদিয়েই সময় পার হোক না কেন বর্তমান সময়ের মতো এমন দুঃসময় আর কখনো পার করেনি। 

 

বিএনপির মূল কর্ণধার দলের চেয়ারপার্সন তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে আছেন কারাবন্দি। যদিও এখন তিনি শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন। তবে তিনি রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। অন্যদিকে বিএনপি’র আরেক কর্ণধার বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান হুলিয়া নিয়ে আছেন দেশের বাইরে। 

 

এছাড়াও দলের অনেক নেতাকর্মী হামলা মামলায় কাবু হয়ে পড়ায় দলটি এখন অনেকটাই নেতৃত্ব শূন্যতায় ভূগছে। তবে বিদেশে থেকেও অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা করছেন তারেক রহমান। তবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে দলটি। 

 

এরই মধ্যে লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে দলকে চাঙ্গা করতে চাচ্ছে বিএনপি। এতে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন তৃণমূলের সমর্থকগণও। তবে যারা দলের দুঃসময় দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন সেসব নেতাদের এই সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে আবারও সুযোগ নেওয়ার বিষয়টি অকেকেই পীড়া দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। অন্যদিকে এরই মধ্যে আবার নানান বিতর্কেও জড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
 


এই বিষয়ে কথা বললে নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে দলের তৃণমূলের অনেক নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে সারা বাংলাদেশের বিএনপির মতো একই হাল নারায়ণগঞ্জ বিএনপিরও। বলা চলে তার চেয়েও করুণ অবস্থা। কারণ নারায়ণগঞ্জ বিএনপির এক সময়ের হাই প্রোফাইল নেতাদের মধ্যে অনেকেই পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন। যারা বেঁচে আছেন তাদের কেউ কেউ নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন, কেউ বা বয়সের ভারে নূয্য হয়ে শয্যাশায়ী আছেন, আবার কেউ দল থেকে বহিস্কৃত হয়ে দলচ্যুত হয়েছেন। 

 

তারা জানান, এখানে অনেক নেতা কর্মী আছেন যারা দলের দুঃসময়েও পাশে থেকে বিভিন্ন হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। আবার অনেক নেতা কর্মী আছেন যারা দলের দুর্দিনে দলের পাশে না থেকে উল্টো বিএনপি বিরোধীদের সাথে আঁতাত করে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। দল যখন সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল তখন তারা দলকে ব্যবহার করে বড় পদে অধিষ্ঠিত হয়ে ফায়দা নিয়েছেন। এখন আবার নতুন করে দলে ভিড়ে দল থেকে বড় পদ নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎটা পোক্ত করে নিতে চাইছেন।


 
এই বিষয়ে কথা বললে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু বলেন, এখন আমাদের দল শতভাগ সুসংগঠিত। যেহেতু এটি একটি বৃহত্তর দল তাই কিছু কিছু মতের অমিল থাকতেই পারে। তিনি বলেন,আমরা গত ৩ মেয়াদ কাল ক্ষমতার বাইরে রয়েছি। আমরা এখনও যে সুসংগঠিত হয়ে রাজপথে থাকতে পারছি, তা আল্লাহ্র রহমত। বাকিটা সময় ও আমরা দলের সাথে সাথে মিলেমিশে থাকতে চাই। 

 

দলীয় স্বার্থবাজ নেতাদের সম্পর্কে তিনি বলেন এমন দু-একজন থাকবেই। কিছু সুবিধাবাদী নেতারা এগুলো করবেই। দলের সাথে তারা কে কিরকম ব্যবহার করেছে সেই কর্মের উপরই তারা ফল পাবে। সময়ই তাদের মূল্যায়ন এর ব্যাপারে বলে দিবে।


 
এই বিষয়ে মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘আমাদের কার্যকলাপ অনুযায়ী আমরা দলকে সঠিকভাবে সুসংগঠিত করতেছি। দল যেভাবে সংগঠিত হচ্ছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট, কিছুদিনের মধ্যে আমাদের দল আরো বেশি সুসংগঠিত হবে। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, এই রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লোকই থাকবে। 


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি হলো সমর্থক এবং কর্মী সমৃদ্ধ দল। যারা ইতিপূর্বে বিএনপির বিভিন্ন সুফল ভোগ করছে তারা যেমন দলে আছে, তেমনি ত্যাগী নেতা-কর্মীও রয়েছে। এখানে নেতা থেকে কর্মী এবং সমর্থকদের প্রভাবটা বেশি। এই দলের নেতার অভাব নাই। এখানে অনেক দক্ষ এবং সু-শৃঙ্খল নেতা আছে।

 

কিছু কিছু নেতা আছে যারা ইতি পূর্বে এই দলের অনেক সুবিধা ভোগ করে আসছে। দলের দু:সময়ে তারা দূরে আছে। কারণ তারা সরকারের সাথে আঁতাত করে চলে। এইসব করেতো কোনো দিনই জনগণের কাছে ভালো হতে পারবে না। আমার মনে হয়, অনেকেই এখন তাদের অতীতের ভুলটা বুঝতে পারতেছে। ভুল বুজে অনেকেই ফিরে আসতেছে এবং দলে সক্রিয় হইতেছে। 

 

দলে সক্রিয় যে কেউ হতেই পারে। যারা দলের পূর্বের কথা ভুলে দলের সাথে কাজ করবে, তাদেরকে দল সবসময়ই স্বাগত জানাবে। তবে ভবিষ্যতে যদি দল ক্ষমতায় আসে, মূল্যায়ণের ক্ষেত্রে অতীতে যারা যে ধরণের ভূমিকা পালন করেছে সে অনুযায়ী-ই তারা মূল্যায়িত হবে আশা করি। এন.এইচ/জেসি


 

এই বিভাগের আরো খবর