শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বিএনপি তিন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে বলে দাবি পুলিশের

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২২  


 

# তদন্ত করে আমরা ঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেব : এসপি
# ভীত হয়ে নানা ধরণের কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে : গিয়াসউদ্দিন
# প্যানিক তৈরি করে জল ঘোলা করতে চায় : গোলাম ফারুক খোকন

 

বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এবং মাদানী নগর এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে, ফতুল্লা থানার কমর আলী স্কুলের সামনে এবং বি বি রোড এলাকার হক প্লাজার সামনে এ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

 

তারা বলছেন, এই বিক্ষোভ মশাল মিছিল বের করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা অর্ধশতাধিক টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে। আশেপাশের লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণের ফলে।

 

 

এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঢাকামুখী প্রবেশপথের যান চলাচল কিছুটা সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মহাসড়ক থেকে টায়ার সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। স্থানীয়রা জানায় বিএনপি নেতা কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এ মশাল মিছিল বের করে।

 

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান পিপিএম বার জানান, সন্ধ্যা ছয়টার পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে বিপুল সংখ্যক টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে।

 

 

এ দিকে ফতুল্লার কমর আলী স্কুলের সামনে বিএনপির কিছু সমর্থক ককটেল হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে জানান ফতুল্লা থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজাউল হক দিপু। বি বি রোড এলাকার হক প্লাজা ও পপুলারের গলির মাথায় বিএনপি কিছু সমর্থক ককটেল হামলা ও অগ্নি সংযোগ করেছে বলে জানান সদর থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান।

 

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, ঘটনাটি জেনে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি এবং পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি ঘটনাটি কারা ঘটিয়েছে । তদন্ত করে আমরা ঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। তবে, জেলা বিএনপির নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা।

 

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন দাবি করেন, ‘আমাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে সরকার। ইতোমধ্যে আমাদের সাতটি থানা এলাকাতেই নেতাকর্মীদের নামে ‘গায়েবী মামলা’ দায়ের করা হয়েছে।

 

 

সমাবেশকে ঘিরে এসব করা হচ্ছে। যাতে করে আমরা প্রস্তুতি নিতে না পারি। বাড়িঘর ছাড়া থাকি। সে চেষ্টার অংশ হিসেবে প্রশাসনকে মাঠে নামানো হয়েছে। নানা কুটকৌশলের মাধ্যমে সরকারি দলের নেতাকর্মীরাই এসব কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে বিএনপির ঘাড়ে চাপাচ্ছে।

 

 

তিনি যুগের চিন্তাকে আরও বলেন, ‘এদিন (বুধবার) আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মীই কোনো রকম মিছিল বের করেনি। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ থেকে ব্যাপক সংখ্যক লোক ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। এমন খবরে সরকার ভীত হয়ে নানা ধরণের কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।

 

 

তবে যত রকমের প্রতিবন্ধকতাই সৃষ্টি করা হোক না কেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ থেকে স্মরণকালের লোক সংখ্যা যাবে ঢাকায়। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে যোগ দিতে চাই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তারা বজায় রাখার জন্য নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।

 

 

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতাকর্মী কোনো মশাল মিছিলতো দূরের কথা কোনো রকম মিছিলই করেনি। ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।

 

 

সরকার দলীয় লোকজন এসব করে আমাদের উপর দায় চাপাতে চাচ্ছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ঢাকার সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। মানুষের কাছে এগুলো এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে। তারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এসব মামলা, মিথ্যা বানোয়াট, কাল্পনিক অভিযোগই এর প্রমাণ।

 

 

তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে একটি মহল আছে যারা সবসময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে থাকে। নানা সময় নানা ধরণের হুমকি ধমকি দিয়ে প্যানিক তৈরি করে জল ঘোলা করতে চায়। যা শুধু নারায়ণগঞ্জই নয়। সারা দেশের মানুষই জানে। এই মহলটির মাধ্যমেই সরকার এসব ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করাচ্ছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর