শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হতে দৌড়ঝাঁপ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২২  



# সবাই সভাপতি হতে চায়
# বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছেড়ে যাইনি : রুবেল
# কর্মীদের মন জয়ের মাধ্যমে নেতা হওয়া যায়: শফিক

 

 

টানা তিন মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় রয়েছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। আর এই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও তাদের অন্যতম প্রধান অঙ্গসহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা তেমন একটা শক্তিশালী  হতে পারছে না। শক্তিশালী না হওয়ার পিছনে প্রধান কারণ হিসেবে মনে করছেন কমিটি না থাকা। বর্তমানে ৫ মাস যাবৎ জেলা মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি নেই। আর এতে ঝিমিয়ে পরছে দলীয় নেতারা। তবে যারা পদে আসতে চাচ্ছেন তারা তাদের দলীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে দলের নেতা কর্মীদের সক্রিয় রাখছেন।

 

এদিকে এই বছরের শুরুতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর নির্দেশক্রমে ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং এর অন্তর্গত সদর থানা, ফতুল্লা থানা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, বন্দর থানা, রূপগঞ্জ থানা, সোনারগাঁ থানা কমিটি ও মহানগরের অন্তর্গত ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

 

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ কমিটিতে সভাপতি পদে ৩ নেতা দৌড়ঝাঁপ করছে। তার মাঝে মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন এবারও সভাপতি পদে থাকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। কেন্দ্র তাকে মুল্যায়ন করে পুনরায় সভাপতি পদে দায়িত্ব দিবে বলে তিনি আশাবাদি। তবে মহানগরের পূর্বের কমিটি নিয়ে তৃনমূলের অভিযোগ রয়েছে, কেননা পূর্বে তারা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি দিতে পারেনি। এতে তাদের ব্যর্থতার দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারেন না। নতুন কমিটিতে আসার জন্য তরুণ কয়েকজন নেতা দলীয় কর্মসূচিতে সরব হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তার মাঝে রয়েছেন সাবেক জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কায়কোবাদ রুবেল। তার সাথে রয়েছেন নতুন মুখ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক।  


 
এদিকে কমিটিতে পদে আসার জন্য এই তিন নেতা নিজেদের অবস্থান জানান দেয়ার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। সেই সাথে দলীয় কর্মসূচি পালনের জন্য নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবকলীগে এবার নতুন নেতৃত্ব চান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। একাধিক নেতা অভিযোগ তুলেন, আগের কমিটিতে যারা দায়িত্ব পালন করেছে তারা মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনে ব্যার্থ হয়েছেন। আর এজন্য এবার তাদের কপাল পুরতে পারে। অন্যদিকে নতুন মূখ হিসেবে মহানগরের দুই ব্যক্তি দলীয় কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে কেন্দ্রের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। তারা প্রত্যেকেই আশাবাদি কেন্দ্র তাদের মূল্যায়ন করে সভাপতি পদে দায়িত্ব দিবেন। তবে ৩ জন সভাপতি পদ দাবী করলেও ১ জন সভাপতি হবেন। কিন্তু কেন্দ্র যাকে যোগ্য মনে করে সভাপতি পদে দায়িত্ব দিবে তারা তাকেই মেনে নিবে।  


 
অন্যদিকে ২০১৭ সালের ২০ জুলাই শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি বিলুপ্ত করে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন করা হয়। তখন সভাপতি করা হয় মো. জুয়েল হোসেনকে যিনি বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিটি করপোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান। তাদের অধীনে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে তেমন একটা উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন অনেকবারই ঘোষণা দিয়েছেন যে কিছুদিনের মধ্যেই থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু কার্যত সেই ঘোষণার বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয় নাই।

 

মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি প্রার্থী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য কায়কোবাদ রুবেল বলেন, আমি জেলা ছাত্রলীগের নিপু আরাফাত কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই সাথে বিএনপি শাসনামলে আন্দোলন সংগ্রামে থেকে দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। দলীয় কর্মসূচি পালনে মাঠে ময়দানে সবার আগে থাকতাম। আর এজন্য বিএনপি আমলে আমাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়। তখন আমরা বাড়িতে থাকতে পারতাম না। দলের জন্য জেল জুলুম থেকে শুরু করে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি তার পরেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছেড়ে যাইনি। এমনকি দলীয় ভাবে কোন সুবিধা ভোগ করি নাই। তাই আমি বিশ্বাস করি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমাকে মূল্যায়ন করে মহানগর সভাপতি দায়িত্ব দিবে।

 

অন্যদিকে মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের আরেক সভাপতি প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, তৃণমূল নেতা কর্মীদের অনুরোধে আমি মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে নাম জমা দিয়েছি। দীর্ঘ দিন যাবৎ আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জরিত আছি। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটিতে দক্ষতার সাথে সহ সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছি। দলের দুঃসময়ে কাজ করেছি। কোন সুবিধার দিকে তাকাই নাই। তাছাড়া এবার শুনা যাচ্ছে আগের কমিটিতে যারা দায়িত্বর পালন করেছে তাদের এবার কমিটিতে দায়িত্ব দেয়া হবে না। সেই হিসেবে আমি নেতা কর্মীদের আস্থার জায়গায় আছি। কেননা কর্মীদের মন জয়ের মাধ্যমে নেতা হওয়া যায়। আর আমি কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করার পাশা পাশি তাদের মনজয়ে কাজ করে যাচ্ছি। কর্মীদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি।

 

মহানগরে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘ দিন মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। দলীয় দুঃসময়ে দলকে চাঙ্গা রেখেছি। কেন্দ্র যাকে মুল্যায়ন করবে আমরা তাকেই মেনে নিবো। আমি বিশ^াস করি কেন্দ্র আমাকে মূল্যায়ন করবে।এমই/জেসি


 

এই বিভাগের আরো খবর