মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

মেয়র আইভীকে হত্যা চেষ্টার মামলায় শাহ নিজাম, হেলালসহ ৮ জনের জামিন

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : হকার ইস্যুতে বঙ্গবন্ধু সড়কে ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হত্যাচেষ্টা ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার ৮ আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত ।

 

সোমবার ( ১৩ জানুয়ারি ) সকালে সাড়ে এগারোটায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন ।

 

এরআগে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে  উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিননামা জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন।   

 

আসামি পক্ষের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল জানান, হকার্স সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিরা উপস্থিত হয়ে জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ।

মামলার প্রধান আসামি ঘটনার দিন অস্ত্র প্রদর্শনকারী নিয়াজুল ইসলাম খান (৫২) ব্যতিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম (৪৯), সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল (৪৮), শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু (৪৬), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন (৩৫), স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব (৪২), জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন (৩২), যুবলীগ কর্মী নাসির উদ্দিন ওরফে টুন্ডা নাসির (৫২) এবং যুবলীগ নেতা চঞ্চল মাহমুদসহ (৫২) । 

 

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় ২২ মাস ১৮ দিন পর আদালতে মামলা করা হয়। নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফাহমিদা খাতুনের আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানাকে এজহার হিসেবে গণ্য করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

 

মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জি এম এ সাত্তার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানাকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

 

মামলায় ঘটনার দিন অস্ত্র প্রদর্শনকারী নিয়াজুল ইসলাম খানসহ জামিননামা দাখিল করা ৮জনসহ ৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

 

মামলার বাদী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত আইন কর্মকর্তা জি এম এ সাত্তার বলেন, বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে হকার বসা কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি চাষাড়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কে মেয়র আইভীর উপর মামলার আসামি ৯জনসহ অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালায় এবং আরো প্রায় একহাজার ব্যক্তি বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ছোড়ে। সাংসদ শামীম ওসমানের ইন্ধনে ও প্রচারণাতেই এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন এ ঘটনায় মেয়র আইভী ও তার সমর্থকদের হামলায় ৪৩ জন গুরুতর আহত হয়।

 

এঘটনায় প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। ওখানে মেয়রের সামনে উপস্থিত ব্যক্তিরা মানবঢাল তৈরি করে মেয়রকে উদ্ধার করে। এই ঘটনার ৫দিন পর ২২ জানুয়ারী আমি বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এজাহার দেয়া হলেও তা পুলিশ মামলা হিসেবে না নিয়ে জিডি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে।

 

পরে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন করা হয়। তাতেও কোন ফল না হওয়ায় উচ্চ আদালতে রীট পিটিশন দায়ের করেন। উচ্চ আদালতের আদালতের বিচারক এম এনায়েতুর রহিম ও মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এর গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ ১ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

 

উচ্চ আদালতের নিদের্শ মতে বুধবার নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে বিকেলে এই আদেশ দেন।

 


পরে গত ১০ ডিসেম্বর নিয়াজুল বাদে মামলায় নাম থাকা ৮ আসামি সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চের স্মরণাপন্ন হন।

 

উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারী ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় সংঘর্ষে  মেয়র আইভী,সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা ঘটে।

 

এ ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি রাতে পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) জয়নাল আবেদীন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ।

এই বিভাগের আরো খবর