শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২০  

রমজান মাসের রোজার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখার গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। একমাস রোজা পালনের পর আরও অল্প কিছু রোজা রেখে পুরো বছরের রোজা রাখার মর্যাদা লাভ করার সুযোগ রয়েছে ইসলামি শরিয়তে।


হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সাহাবিদের শাওয়াল মাসের ছয় রোজা রাখার প্রতি উৎসাহ দিতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখল অতঃপর শাওয়াল মাসের ছয় রোজাও রাখল ওই ব্যক্তি যেন সারা বছরই রোজা রাখল। -সহিহ মুসলিম


অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা শেষ করে শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখবে, সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ -মুসনাদে আহমদ ও দারেমি


এ ছয় রোজাকে পুরো এক বছরের রোজার সওয়াবের পর্যায়ভুক্ত করা হয়েছে এ জন্য যে, বান্দার প্রতিটি ভালো আমলকে আল্লাহতায়ালা ১০ গুণ সওয়াব দান করেন। এমনিভাবে সব রোজার সওয়াব মিলে ৩৬০ দিন হয়ে গেল। আর বছরের বাকি পাঁচদিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এভাবে পুরো বছর রোজার সওয়াব অর্জিত হয়।


মহান আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেন, যে একটি সৎকাজ করবে, সে তার ১০ গুণ সওয়াব পাবে। -সূরা আনআম: ১৬০


কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতাস্বরূপ এই ছয় রোজার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা মোস্তাহাব, যাতে রোজাগুলো ছুটে না যায়। কোনো ব্যস্ততা যেন পুণ্য আহরণের এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে না পারে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। নফলসমূহ ফরজের ত্রুটিগুলোর ক্ষতিপূরণ করে। অর্থাৎ জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে রোজাদার কর্তৃক যে ভুলত্রুটি হয়ে থাকে নফল রোজা তা দূর করতে সহায়তা করে।


এ রোজা ফরজ নামাজের পর সুন্নতে মোয়াক্কাদার মতো। যা ফরজ নামাজের অসম্পূর্ণতাকে পূর্ণ করে। অনুরূপভাবে শাওয়ালের ছয় রোজা রমজানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং তাতে কোনো ত্রুটি থাকলে তা দূর করে।


মা-বোনদের এ দিকটি খেয়াল রাখা উচিত যে, প্রাকৃতিক কারণে প্রতি রমজানে তাদের যে রোজাগুলো কাজা হয়ে যায়, উচিত হবে প্রথমে সেই কাজা রোজাগুলো আদায় করা। এরপর শরীর সুস্থ ও সুযোগ থাকলে পূর্ববর্তী বছরের কাজা রোজা আদায় করা। যদি কোনো কাজা রোজা না থাকে, তাহলে শাওয়ালের ছয় রোজা রাখাই হবে উত্তম।


শাওয়ালের ছয় রোজা ধারাবাহিকভাবে অথবা বিরতি দিয়ে রাখা যায়। কারও জিম্মায় যদি রমজানের কাজা রোজা থেকে থাকে, তবে প্রথমে রমজানের কাজা আদায় করে নেবে, এরপর শাওয়ালের রোজা রাখবে। যারা পবিত্র রমজানের যথাযথ কদর করেননি তাদের উচিত এখনই আল্লাহতায়ালার কাছে তওবা-ইস্তেগফার করে আল্লাহতায়ালার রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় নেয়া। গোনাহ ছেড়ে দিয়ে নেক আমলের দিকে ফিরে আসা, অন্যথায় দুনিয়া এবং আখেরাতে আল্লাহতায়ালার ভয়াবহ শাস্তি অনিবার্য।