বুধবার   ০১ মে ২০২৪   বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

৮ মাসেও বদলায়নি মহানগর যুবদলের ভাগ্যের চাকা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৪  

 

# রমজানে কথা থাকলে ও হয়নি ইউনিট কমিটি

 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অঙ্গসংগঠনের মধ্যে অন্যতম মহানগর যুবদল। মহানগর যুবদলকে সাংগঠনিক ভাবে আরো শক্তিশালী ভাবে গড়ে তুলতে হলে নিশ্চই মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনেকটাই গুরুত্বপূর্ন। এছাড়া সাংগঠনিক প্রক্রিয়াধীন অনুযায়ী ইউনিট কমিটি করতে হবে যোগ্য নেতাকর্মীদের দ্বারা। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ পৃথক পৃথক দুই মহানগর যুবদলের কমিটি গঠন হলে ও একটির মাধ্যমে ও হয়নি মহানগর যুবদলকে শক্তিশালীভাবে ঘরে তোলার প্রক্রিয়া। তা ছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের এই ব্যর্থতার কারণে রাজনৈতিক পরিচয় পাননি যুবদলের শত শত নেতাকর্মী।

 

জানা গেছে, রমজানের মধ্যেই মহানগর যুবদলের ইউনিট কমিটি যোগ্যদের দ্বারা গঠনের লক্ষ্যে গত (১২ মার্চ) মহানগর যুবদলের আওতাধীন থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে জরুরী সভা ও তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেন। মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব শাহেদ আহম্মেদ। সে সময় তারা সংবাদকর্মীদের নানা প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন এই রমজানের মধ্যেই তারা একে একে করে ইউনিট কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করবো।

 

আর যাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে সকলেই কঠোর আন্দোলনে রাজপথে থেকে ব্যাপক মামলা-হামলার শিকারসহ ব্যাপক নির্যাতিত হয়েছেন। এদের দিয়ে ইউনিট কমিটি সাজিয়ে এই যোগ্য নেতাদের রাজনৈতিক পরিচিয় দেওয়া হবে। কিন্তু রমজান শেষে ঈদুল ফিতর ও অতিবাহিত হলো কিন্তু এখনো মহানগর যুবদলের ইউনিটের নেতাকর্মীদের ভাগ্যের চাকার পরিবর্তন ঘটেনি। যা নিয়ে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের উপরে ক্ষিপ্ত নেতাকর্মীরা। তা ছাড়া এ আগে ও কয়েক দফায় দফায় কমিটি গঠন হলে ও তারা ও ইউনিট কমিটিগুলোকে রাজনৈতিক পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

 

এবারও সজল-শাহেদের কমিটি গঠনের ৮ মাস হলেও হয়নি ইউনিট ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যা নিয়ে বর্তমানে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎঘাটন হচ্ছে নানা প্রশ্নের। দ্রুত কমিটি ঘন না হলে। আগামীতে মহানগর যুবদল নেতা ও কর্মী সংকটে পরবে। যার মূল কারণ হলো বর্তমানের নেতাকর্মীরা পদ-পদবী ছাড়া আন্দোলনে নামতে চায় না, কারণ সকলেই চায় তাদের একটা আলাদা পরিচিতি সেই লক্ষে শীঘ্রই ইউনিট কমিটি ও মহানগর যুবদলকে শক্তিশালী করতে হলে পূর্নাঙ্গ কমিটি অত্যন্ত প্রয়োজন বলছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

 

সূত্রে বলছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতায় রয়েছে সদর, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও বন্দর উপজেলা ইউনিট। রয়েছে ৫ ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি। এতগুলো কমিটির মধ্যে মাত্র দু’টি ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করেছে বর্তমান মহানগর কমিটির নেতারা। বাকি ইউনিটগুলোতে দীর্ঘদিন কোনো কমিটি নেই। মহানগর যুবদলের কমিটিতে বারবার রদবদল হলেও এসব ইউনিট কমিটির পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মনের আশা আর পূরণ হয়না।

 

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি, মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক, মনোয়ার হোসেন শোখনকে সহ-সভাপতি, সাগর প্রধানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রশিদুর রহমান রশুকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় ৫ মাস পর ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

 

এরপর ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদ। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর ঘোষণা করা হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সুপারফাইভ আহ্বায়ক কমিটি। মমতাজউদ্দিন মন্তুকে আহ্বায়ক আর মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে ঘোষণার প্রায় ২ বছর এই ৫ জনেই আটকে ছিলো মহানগর যুবদল। এই সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদল নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি, পারেনি কোনো ইউনিট কমিটিও ঘোষণা করতে।

 

তারা শুধু কমিটি বাণিজ্যের মাধ্যমে উৎফুল্ল ছিলো তাদের নেতাকর্মীরা তাদের থেকে দূরে দূরে থাকতো তারা রাজপথে দেখাতে পারেনি কোন ভূমিকা। তা ছাড়া এই কমিটি গঠনের পর থেকে একের পর এক অভিযোগ ছিলো মহানগর যুবদলের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে গত ২০২৩ সালের ২৯ আগস্টে মনিরুল ইসলাম সজলকে আহ্বায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ঘোষণা করা হয় মহানগর যুবদলের ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি।

 

এই কমিটি ও ৮ মাস অতিবাহিত করে ফেললো কিন্তু ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করতে পারেনি। কিন্তু নেতাকর্মীরা আন্দোলনে রয়েছে যারা কমিটিতে স্থান পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছে। এদিকে শীঘ্রই কমিটিতে গঠনের জন্য নেতাকর্মীরা চাপও দিয়ে আসছে কিন্তু দলের দূঃসময়ের কারণে এখনো কমিটি হয়নি বলে জানা গেছে।

 

কিন্তু রমজানে দ্রুত কমিটি গঠনের আলোচনার চাপ থাকলেও তা করতেও ব্যর্থ হয়েছেন আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব শাহেদ আহেম্মদ। এদিকে ঈদের পর নতুন রূপে আন্দোলনে আসার ঘোষণা ও রয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে আরো শক্তি দেখাতে সক্ষম হতো যদি অঙ্গসংগঠনের অন্যতম মহানগর যুবদলের ইউনিট কমিটি হয়ে যেত এমনটাই দাবি নেতাকর্মীদের।  

 

এ বিষয়ে মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমরা ইউনিট কমিটি গঠনের জন্য নানা প্রক্রিয়া চালু করেছিলাম সেই অনুযায়ী ২টি ইউনিয়ন কমিটি ও গঠন করেছি। কিন্তু হঠাৎ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগে বিএনপি কঠোর আন্দোলন ঝাঁপিয়ে পরে সেই কারণে আমাদের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া অনকটাই পিছিয়ে পরে। রমজানে আমরা তথ্য ফরম কপি সকল নেতাকর্মীদের হাতে হাতে পৌঁছে দিয়েছি। শীঘ্রই আমাদের কমিটির কার্যক্রম শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর