মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

উচ্ছেদ হয়নি ইসদাইরের বিপজ্জনক মেলা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২৪  

 

ফতুল্লার ইসদাইর বাজারে বসানো অবৈধ মেলা উচ্ছেদ করেনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসন। ফলে, সরকারি বিদ্যুৎ চুরি করে একেবারে রেললাইন ঘেষে বিপজ্জনকভাবে চলছে অবৈধ ওই মেলা। এর আগে, ওই মেলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তা উচ্ছেদ করার কথা জানিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে, সন্ধ্যার পর মেলায় প্রচুর মানুষের আনাগোনা থাকায় যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন স্থানীয় নাগরিকরা।

 

তার উপর মেলা জুড়ে মাদকসেবীদের আড্ডা, মাদক বেচাবিক্রি এবং জুয়া সহ নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার আবদুল আউয়ালের ছত্রছায়ায় মেলার আড়ালে অবৈধ কর্মকান্ড করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ইসদাইর বাজার কমিটির সভাপতি রুবেল মিয়া ও মো. জিতু নামের একজন।

 

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডস্থ ইসদাইর বাজার এলাকার একেবারে রেললাইন ঘেষে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে মেলা। প্রায় ১৫টি দোকান, নাগরদোলাসহ যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে বসানো এই মেলায় স্থানীয়দের পদচারণা ছিল চোখে পরার মতো।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইসদাইর বাজার কমিটির সভাপতি রুবেল মিয়া ওরফে মুরগী রুবেল ও জিতুর নেতৃত্বে পুরোপুরি অবৈধভাবে বসানো হয়েছে ওই মেলা। বছরে একাধিকবার, বিশেষ করে প্রতি ঈদের পূর্বের সময় ইসদাইর বাজারের রেললাইন ঘেষে বসানো হয় ওই মেলা।

 

সচেতন স্থানীয় নাগরিকরা বলছেন, এই মেলার কারণে যেকোন দিন যেকোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কেননা, রেললাইনের পাশ ঘেষেই বসানো হয়েছে মেলার দোকানগুলো। কিছুক্ষণ পরপর রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। এখানে শিশু কিশোর থেকে প্রায় সব বয়সের মানুষ আসেন। একটু এদিক থেকে সেদিক হলেই বড় ধরণের দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে সাধারণ মানুষ। ইসদাইর বাজার কমিটির নামে কিছু লোভী চাঁদাবাজদের কারণে বিপদগ্রস্থ হতে পারে মেলায় আসা মানুষগুলো।

 

এ বিষয়ে মেলার পরিচালক জিতু মিয়াকে মুঠোফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানি না ভাই। মুরগীর দোকানের রুবেলের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে ইসদাইর বাজার কমিটির সভাপতি ও অবৈধ মেলার প্রধান পরিচালক রুবেল মিয়া বলেন, আমরা প্রতি বছরই এইখানে মেলা বসাই। মেলা বসানোর অনুমতি নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাগো ওয়ার্ডের মেম্বারের অনুমতি আছে। মেম্বার তো মেলা বসানোর অনুমতি দিতে পারেন না। জানেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এইখানে মেলা বসাইতে আমাগো অনুমতি লাগে না ভাই। প্রতিবছরই তো মেলা বসাই কোন সমস্যা তো হয় না।

 

এ বিষয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আবদুল আউয়ালের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ইসদাইরে যে মেলা বসানো হয়েছে আমি সেটা জানি না। আমি নতুন মেম্বার। আমার শরীর অসুস্থ। আমি তো বাসা থেকেই বের হই না। আমার অনুমতিতে সেখানে মেলা বসানো হয়েছে এটা মিথ্যা কথা।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম যুগের চিন্তাকে বলেন, প্রশাসনের অনুমতি ব্যাতিত অবৈধভাবে মেলা বসানোর এখতিয়ার কারও নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি কারা সেখানে মেলা বসিয়েছে। অবৈধভাবে মেলা বসিয়ে থাকলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর