মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

শামীম ওসমানের কাছে হকার সমস্যার সমাধান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪  

 

নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে হকার সমস্যা নতুন নয়। বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে হকার উঠাতে দিয়ে ২০১৮ সালে মেয়র আইভীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় হকাররা সাংসদ শামীম ওসমানের আনুকূল্য পেয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। তবে সময় গড়িয়েছে। মেয়র আইভী ও শামীম ওসমানের মধ্যে আগের সেই দ্বন্দ্ব অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে শহরের ফুটপাতে হকার না বসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।

 

সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক নানা শর্ত আরোপের পরও ঈদের আগে সিরাজউদৌলা সড়কে হকারদের বসতে দিতে হয়েছে। তবে হকারদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তা নিয়ে এখনো জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। গত ৮ এপ্রিল বিকেএমইএ ভবনে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে মেয়র আইভী হকার সমস্যা সমাধানে আবারও শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।  

 

হকার সমস্যা নিয়ে আইভী বলেন, ‘সমস্যা আমি খুব বেশি দেখি না। যে দু-একটা সমস্যা আছে সেটা শামীম ও সেলিম ভাই বসে যদি শুধু বলে দেয় তাহলেই তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান হয়ে যায়। আমি শামীম ভাইকে বলেছিলাম আপনি যদি বলেন, তাহলে কাল থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কে কেউ বসবে না। একজন হকারও বসবে না। শামীম ভাই তো বললো না। বললে তো একজন হকারও থাকে না।’

তিনি বলেন, ‘এটা সত্য, উনি (শামীম ওসমান) বললে থাকবে না। আসাদ কই পালায়ে যাবে খুঁজেও পাবে না। উনি ৫ মিনিট সময় দিলে সে দুই মিনিটে পালিয়ে যাবে। যানজট থেকে শুরু করে সবকিছুর সমাধান হবে। শামীম ভাই, সেলিম ভাই চাইলে শহরে কিছুই থাকবে না।’ সিটি মেয়র বলেন, ‘সেলিম ভাই বলছে মাথা ঠান্ডা রাখতে। আমি কখনোই গরম হই না। চেষ্টা করি ঠান্ডা মাথায় কথা বলার জন্য। ঈদের পর বসবে, আমি চেষ্টা করবো বসার জন্য।

 

এদিকে একই অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান বলেন, ‘মেয়র বলেছেন, ফুটপাত সিটি করপোরেশনের। এটা সত্য। আমি বলেছিলাম হকার বসলে সব জায়াগায় বসবে, না বসলে কোথাও বসবে না। কারণ এটা মানুষের পেটের চাহিদা। আমি মানুষের পেটের চাহিদায় ধাক্কা দিতে রাজি না। কিন্তু সমর্থন করতে রাজি না, পুরো শহরকে অকেজো করতে রাজি না। আমার মনে হয়, এর মধ্যেখান থেকেই একটি পন্থা বের করতে হবে। সেটা কি হবে সেটা সমাধান সিটি করপোরেশনেরই বের করা উচিত। আমরা সহযোগিতা করবো।’

 

এদিকে অনুষ্ঠানে সেলিম ওসমান বলেন, ‘মানুষের চাহিদা যানজটমুক্ত শহর। আমরা চেষ্টা করছি। সলিমুল্লাহ সড়কে বসার ব্যবস্থা করেছি, হলিডে মার্কেট করেছি। এখানে সবাই আছে হকার মার্কেটের কেউ নাই। তাদের কাছে একটাই দাবি ছিল কোনো অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সড়কে বসবে না। পুলিশ সহযোগিতা করে সরিয়ে দিয়েছে। আমি যখন অসুস্থ ছিলাম তখন তারা চোর-পুলিশ খেলার মেতেছিল। কিছু দালাল হয়ে গিয়েছিল, টাকা নিচ্ছিল। বাস মালিকদের বলিনি তবু তারা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল।’

 

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না কোনো অবস্থায় বাধা সৃষ্টি করা হোক। নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মোড় থেকে নারায়ণগঞ্জ কলেজের রাস্তাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বাজারের ভিতরে যথেষ্ট জায়গা থাকার পরেও এখানে এসে বসে। যদি বহিরাগত বলি অন্যায় করবো না। নারায়ণগঞ্জে শ্রমিকদের সংখ্যা অনেক বেশি, এটি শিল্প অঞ্চল। এটা ঠিক করতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিটি করপোরেশন ঘোষণা দিয়েছে, ফুটপাতের দুই পাশে গ্রীল করে দেয়া হবে। যাতে দোকান বসলেও কোনো সমস্যা না হয়। দোকান বসার প্রশ্নই আসে না। তবে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে আমাদের সময় দিতে হবে।’

 

এদিকে ঈদের আগে এই মতবিনিময় সভা থেকে নগরবাসীও বলছেন, শহরের মানুষকে স্বস্তি দিতে সত্যিকার অর্থেই যদি ফুটপাত থেকে হকার মুক্ত করতে হয়। তবে সেক্ষেত্রে শামীম ওসমানের তরফ থেকেই স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। তাহলেই শহরের ফুটপাত থেকে হকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান পাওয়া সম্ভব। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর