মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

ফুটপাত দখলমুক্ত রাখাই চ্যালেঞ্জ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৪  

 

ঈদুল ফিতরের আগে পবিত্র মাহে রমজানে শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে পুলিশ প্রশাসনকে একটা বড় অঙ্কের অর্থের যোগান দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান। যার ফলে পবিত্র মাহে রমজানে মোটামুটি যানজটমুক্ত ছিল শহর। তবে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে শহরের ফুটপাতকে হকারমুক্ত রাখার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নই এখন ঈদের পরে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

 

বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে হকাররা বসার জন্য ওত পেতে থাকে। পুলিশের সাথে হকারদের ইঁদুর বিড়াল দৌড়ঝাঁপের চিত্র মাহে রমজানেও লক্ষ্য করা গেছে। হকারদের পুরোপুরি উচ্ছেদ না করে শেষ পর্যন্ত সিরাজউদ্দৌলা সড়কে হলিডে মার্কেটের ব্যবস্থা করা হয়। ঈদের আগের কয়েকদিন টানা সেখানে হকাররা দোকান খুলে বসেন। এখন ঈদের পরে হকাররা সেলিম ওসমান ও প্রশাসনের সাথে করা অঙ্গীকার রাখবেন কিনা এখন সেটিই দেখার বিষয়। 

বঙ্গবন্ধু সড়কে ফুটপাতে হকার বসা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানসহ জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ শহরবাসী আপত্তি জানান। এ নিয়ে হকারদের বেশ কয়েকদফা আল্টিমেটাম, পুনর্বাসন করা হলেও হকারদের শেষ পর্যন্ত নিবৃত্ত করা যায়নি। হকারদের কাছে বলা চলে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো শহরবাসী। হকারদের ফুটপাত দখলের কারণে গোটা শহরের প্রত্যেকটি সড়কে চলা প্রায় দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ঈদ পর্যন্ত হকারদের দমিয়ে রাখা সম্ভব হলেও ঈদের পর ফুটপাতে হকারদের দখল কতখানি ঠেকানো সম্ভবপর হয় এটিই এখন দেখার বিষয়। 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, হকার ইস্যুতে সবসময়ই সরব ছিল নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। কিন্তু গত ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের গোলটেবিল বৈঠক থেকে শুরু করে এই বিষয়ে সবচাইতে সরব ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান। এছাড়া ফুটপাতে হকার সমস্যা নিরসনে সবচাইতে কার্যকর সিদ্ধান্তগুলো এসেছে সেলিম ওসমানের পক্ষ থেকে। হকাররা ফুটপাতে বসার জন্য মরিয়া হলেও এ বিষয়ে ছাড় দিতে নারাজ ছিলেন সেলিম ওসমান।

 

হকারদের হকার্স মার্কেটে পুনর্বাসন, হকারদের তালিকা করা, হকারদের একটি অংশকে এককালীন টাকা প্রদান, বিশেষ ক্ষেত্রে হকারদের প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেয়ার মতো যুগোপযুগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেলিম ওসমান। এছাড়া ঈদের আগে রমজানে শহরকে ট্রাফিকে শৃঙ্খলাময় করতে সবচাইতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন সেলিম ওসমান। এতো কিছুর পরও হকাররা তার সাথে করা অঙ্গীকার ভঙ্গে মর্মাহত হয়েছেন সেলিম ওসমান। তাই ঈদের পর শহরের হকারদের বিষয়টি কোথায় দাঁড়ায় তা নির্ভর করছে মূলত সেলিম ওসমানের ব্যাপারে।

 

গত ২০১৮ সালে ১৬ জানুয়ারি হকার ইস্যুতে মেয়র আইভীর উপর হামলার ঘটনার পর হকাররা শামীম ওসমানের পক্ষ থেকে সান্ত্বনাবানী পেলেও গত দুই মাসে শামীম ওসমান একটি বিষয়েই অটল রয়েছেন, সেটি হল শহরের কোন সড়কের ফুটপাত দখল করে হকাররা বসতে পারবে না।

 

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার গুরুত্বপূর্ণ এই তিন জনপ্রতিনিধির দেয়া বক্তব্য অনুসরণ করে শহরের ফুটপাতে হকারদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল রয়েছেন। ঈদ শেষে এখন দেখার বিষয় অতীতের মতো আবারও হকাররা শহরের ফুটপাত দখলে নেয় কিনা। নগরবাসীর একটাই কথা, পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে শহরের ফুটপাতে হকার বসতে না দেয়ার যে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে তা যেন সামনের দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকে। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর