মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

লাঙ্গলবন্দে শেষ হলো দুইদিনব্যাপী মহাঅষ্টমী স্নানোৎসব

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪  


#স্নানোৎসব প্রায় ১০ লাখ মানুষকে সমাগম ঘটেছে: শিখন সরকার
# স্নানোৎসব উপলক্ষে ৩ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে: এডি.এসপি জহিরুল

বন্দরের লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানোৎসবের সমাপ্তি ঘটেছে। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাপমোচন পুণ্য স্নান তীর্থ ভূমি লাঙ্গলবন্দে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এ মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসব শেষ হয়। সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে তিথির লগ্ন শুরু হয় যা শেষ হবে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ৫৪ মিনিটে শেষ হয়। আয়োজকদের মতে, উৎসবে নদের ১৮টি ঘাটে প্রায় ১০ লাখ পুণ্যার্থী অবস্থান করেছেন।

 

 

স্নানোৎসব উপলক্ষে ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দুইদিন ব্যাপী চলেছে মেলা। পুরান মতে, হিন্দু দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে স্নান করে পাপমুক্ত হন। লাঙ্গল দিয়ে চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে ব্রহ্মপুত্র নদরূপে নামিয়ে আনেন সমভূমিতে। পৌরাণিক এ কাহিনীকে স্মরণ করে প্রতি বছর নির্ধারিত দিনে লাখ লাখ তীর্থযাত্রী পুণ্য লাভের আশায় জড়ো হন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রম্মপুত্র নদে।

 

 

আয়োজকদের মতে পার্শ্ববর্তী ভারত ও নেপাল সহ দেশ-বিদেশের অনেকে অংশ নেয় পবিত্র মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসবে। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাপমোচন পুণ্য স্নানার্থে এক অন্যন্য তীর্থ ভূমি বন্দরের লাঙ্গলবন্দে শুরু চলছে ধর্মীয় পবিত্র মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসব। শুল্কা তিথি অনুযায়ী সোমবার বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিটে লগ্ন শুরু হয়। শেষ হবে মঙ্গলবার বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিটে।

 

 

তবে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ১০ মিনিট থেকে ১০ টার মধ্যে রয়েছে অমৃত যোগ। দুই দিন ব্যাপি এ স্নান উৎসব কে ঘিরে ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জমে উঠেছে মেলা। আগত পূর্ণার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে পূণ্যার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় ও  ভোগান্তি কমাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

 

নদের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রেমতলা, অন্নপূর্না, রাজঘাটসহ ১৮ টি ঘাটে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব সহ ১৮টি ঘাটে স্নান আয়োজন ছিল। নদে কচুরীপানা পরিস্কার, নদীতে খনন সহ সব কিছু ভাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন পূণ্যার্থীরা।

 

 

স্নানোৎসবে আসা পূন্যার্থীরা জানান, পাপ মোচনের আশায় তারা এই ব্রাক্ষ্মপুৎত্র নদে স্নান করতে এসেছেন। শশ্নান ঘাটের সেবায়েত বাবুল কর্তা বলেন, ‘হে সমহাভাগ ব্রম্মপুত্র হে লৌহিত্য তুমি আমার পাপ হরন কর’ এ মন্ত্র উচ্চারণে স্নান করে পাপ মোচনের তীর্থযাত্রী পুন্যলাভের আশায় স্নান করে থাকেন বলে জানালের ঘাটের সেবায়েত। তিনি বলেন, এখানে স্নান করলে পাপ মুচন শেষে পূর্ণতা লাভ হয়।

 


স্নান উৎসব কমিটির সমন্বয়ক ও জেলা পূজা উদযাপন‘র সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার বলেন, পাশ্ববর্তী ভারত ও নেপাল সহ দেশ-বিদেশের এবারের স্নানোৎসব প্রায় ১০ লাখ মানুষকে সমাগম ঘটেছে। স্নান উৎসব কমিটির সমন্বয়ক জানান কমিটির পক্ষ থেকে তিন কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে সব ধরনের সেবা সহায়তার আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) জহিরুল ইসলাম বলেন, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার,ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তিনস্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

 

 

তীর্থস্থানের তিন কিলোমিটার এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনাসহ ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করে মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া যানজট নিরসনে ট্রাফিক ও নদীতে নৌ পুলিশ দশনার্থীদের নিরাপত্তায় কাজ করছে।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি