শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অজুহাত দেখিয়ে ব্যর্থতা ঢাকতে চান তৈমুর-মামুন

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২১  

# আট মাসে একটি ওয়ার্ড কমিটিও করতে পারেননি তারা

 


এবার আগের বারের চেয়েও ব্যর্থ হতে চলেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার এবং অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রধান ব্যাক্তির দায়িত্ব নিলেও বাস্তবে কোনো কাজ করছেন না। দল গঠন করতে না পেরে নানা রকম অজুহাত দেখাচ্ছেন তারা। দলের সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ হেফাজতের মামলায় এখন পলাতক থাকায় তিনি দলকে এগিয়ে নিতে কোনো কাজই করছেন না।

 

অথচ ৪২ সদস্যের আহবায়ক কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এই জেলায় বিএনপিকে সাংগঠনিক ভাবে গড়ে তোলার জন্য। ফলে মামুন ছাড়াও দায়িত্ব পালন করার জন্য আরো অনেকে রয়েছেন এই দলে। কোনো কারণে কোনো নেতা কাজ করতে না পারলে তার বিকল্প কেউ কাজ এগিয়ে নেবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই মামুন নেই তাই সব কাজ বন্ধ, এটা চলতে পারে না বলেই মনে করেন বিএনপির অনেক নেতা। জেলার বিএনপি নেতারা আরো জানান, আসলে রাজনীতি হলো এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ব্যবসা। তিনি বসে আছেন কমিটি নিয়ে বাণিজ্য করার আশায়। কিন্তু বিএনপিতে টাকা দিয়ে কমিটি নেবেন এমন নেতা এখন কমই আছেন। কারণ এমনিতেই প্রায় এক যুগের বেশি সময় দল ক্ষমতার বাহিরে। তাই দলের নেতারা সবাই আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই এবার কমিটি বানিজ্যের আশায় বসে থাকলে কমিটিই হবে না। তাই তৈমুর আলমের উচিৎ সব নেতাকে ডেকে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া।

 

এদিকে এ বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আহবায়ক এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার কোনো এভাবে কমিটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছেন তিনিই সেটা বলতে পারবেন। হাজারো সীমাবদ্ধতার মাঝেও সারা দেশে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। আমরা যেহেতু বিরোধী দল করি তাই আমাদেরকে হামলা মামলা উপেক্ষা করেই এগিয়ে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন সদস্যসচিব মামুন মাহমুদ মামলা খেয়েছেন কিন্তু অন্য নেতারাতো রয়েছেন। বিয়াল্লিশ সদস্যের কমিটি। কমিটিতে যারা আছেন তারা সবাই যোগ্য। তাই আমি মনে করি কেবল মাত্র তৈমুর আলম খন্দকার আন্তরিক হলেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। কিন্তু আমরা তার মাঝে কোনো আন্তরিকতা দেখতে পাচ্ছি না।

 

তাই এভাবে চললে নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপির ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলেই আমি মনে করি। এদিকে নারায়ণগঞ্জে মাসের পর মাস থমকে আছে বিএনপির কমিটি। কোথাও কোনো আওয়াজ নেই। বিশেষ করে আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ হেফাজতের হরতালের মামলার আসামী হওয়ার পর থেকে এই জেলায় বিএনপির কোনো কার্যক্রমই নেই। গতকাল জেলা বিএনপির আরো কয়েকজন নেতার সাথে কথা বললে তারাও বলেন এই বিষয়ে আহবায়ক তৈমুর আলম খন্দকার বলতে পারবেন। তিনি ডাকলে আমরা থাকবো। কিন্তু তিনি ডাকছেন না।

 

প্রসঙ্গত, সারা নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপির নতুন কমিটি করার লক্ষ্যে সকল কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সকলের জন্য সমান একটি ফিল্ড তৈরী করার কথা বলা হলেও আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নতুন করে গড়াতো দূরের কথা কোথাও ভাঙ্গা হয়নি কোনো থানা বা ইউনিয়ন কমিটি। তাই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অনেকে মনে করেন জেলার আহবায়ক কমিটি নতুন করে করা হলেও তারা আসলে তেমন কিছুই করতে পারছেন না। আর এখনতো সদস্য সচিব পলাতক। তাই বলা চলে কেবল মাত্র জেলা কমিটির প্রধান পদটিতে পরিবর্তন এসেছে। আগে জেলা বিএনপির কমিটিতে সভাপতি ছিলেন কাজী মনির আর এখন সেখানে আহবায়ক হয়েছেন এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন বলতে গেলে এই একটাই।

 

তারপরেও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এটা ভেবে আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন যে এবার এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার কিছু একটা করে দেখাবেন। তিনি তার শেষ বেলায় তার দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার চেষ্ঠা করবেন। এরই মাঝে তিনি দলের সাবেক এমপি এবং জেলার সিনিয়র নেতাদের ডেকে তাদের মতামত চেয়ে কথাও বলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কতোটুকু কি হবে এটা নিয়ে এরই মাঝে নানা সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ভালো কিছু হওয়ার পরিবর্তে আগের চেয়ে আরো খারাপ কিছু হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। কারন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে সাত মাস চলে যাচ্ছে। বিগত ১ জানুয়ারী ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা দেয়া হয়।  

 

এদিকে সারা নারায়ণগঞ্জ জেলায়ই ইউনিয়ন কমিটিগুলি করা হয়েছে ১৩/১৪ বছর আগে। ফলে নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন পরিবর্ধন না আসায় ঝিমিয়ে পরেছে জেলার সব কয়টি ইউনিয়ন কমিটি। তাই এসব কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে করার কথা ছিলো। কিন্তু তৃনমূল পর্যায়ে দলকে ঢেলে সাজানোর কোনো লক্ষই দেখা যাচ্ছে না এডভোকেট তৈমুর এবং মামুন মাহমুদের মাঝে। তাই জেলা বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করার পর হঠাৎ জেগে উঠা বিএনপি বিগত আট মাসে একেবারে ঘুমিয়ে পরেছে বলেই মনে করেন এই দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এই বিভাগের আরো খবর