শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কোন মধুতে বিভাজন ?

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২১  

নারায়ণগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল এখনো হয়নি। কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা হবে, তাও হলফ করে বলছে না স্থানীয় সরকার বা নির্বাচন কমিশনও। তবে এবছরেই নির্বাচন হবে, এমন প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছেন নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা। এর মধ্যে বেশ আলোচনায় আছে সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নটি। ইতিমধ্যেই নৌকা প্রতীক প্রত্যাশীরা ব্যানার ফেস্টুন সাটিয়ে নির্বাচনি সালাম দিচ্ছেন ভোটারদের।

 

যদিও নৌকা পাওয়ার বিষয়ে কোন প্রার্থীই এখনও চুড়ান্ত হয়নি। তবে, দিন ক্ষন চুড়ান্ত না হলেও আগ্রহী প্রার্থীদের পক্ষে বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগেরই দুটি অংশ। এমনকি জাতীয় পার্টির স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান ও তারই ছোট ভাই আওয়ামী লীগের সাংসদ শামীম ওসমানও গোগনগর ইউনিয়নের প্রার্থী নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। সেলিম ওসমান আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিনকে সমর্থন করলেও শামীম ওসমানের অবস্থান ফজর আলীর পক্ষে।

 

সেলিম ওসমান যেখানে জসিম উদ্দিনকে সমর্থন করে একই মঞ্চে ফজর আলীকে নানা ভাষায় তুলোধুনো করেছেন, সেখানে তারই ভাই সাংসদ শামীম ওসমান ফজর আলীর পক্ষে থাকায় দুই ভাতৃদ্বয়ের মাঝে মতের অমিল দেখা দিয়েছে। তেমনই ভিন্নতা দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও সদর থানা আওয়ামী লীগের নেতাদের মাঝেও। জেলা ও সদর থানা আওয়ামী লীগের নেতারা জসিম ও ফজর আলীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগের নেতায় নেতায় দেখা দিয়েছে অর্ন্তদ্বন্দ্ব।


জানা গেছে, ফজর আলী আওয়ামী লীগের কোন পদপদবীতে নেই। তবে, তিনি ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যান নওশেদ আলীর ভাই এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। অন্যদিকে জসিম উদ্দিন সদর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক পেয়েছিলেন। যদিও সেই নির্বাচনে প্রত্যাশা পূরন করতে না পেরে ফজর আলীর ভাই নওশেদ আলীর কাছে পরাজয় বরণ করেন। দলীয় ভাবে ওই দুই প্রার্থীর অবস্থান নড়বড়ে হলেও নৌকা প্রতীক প্রত্যাশা করা এই দুই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নেতায় নেতায় অর্ন্তদ্বন্দ্ব রেশ ছড়িয়ে পড়ছে তৃণমূলেও। তৃণমূলের কর্মীরাও দুই প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে যোগ্যতার যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন।  

 


এদিকে, সম্প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর সুস্থ্যতা কামনায় জসিম উদ্দিন একটি দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ওই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। যদিও ওই অনুষ্ঠানে আব্দুল হাই স্পষ্ট বলেছেন, ‘নৌকা প্রতীক দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌকা প্রতীক কেনার মত কারো টাকা হয়নি।’ অর্থাৎ টাকা দিয়ে নৌকা প্রতীক কেনা যাবে না বলে তিনি স্পষ্ট মন্তব্য করেন। জসিম উদ্দিনের অনুষ্ঠানে আব্দুল হাইকে দেখা গেলেও তার প্রতিদ্ব›দ্বী ফজর আলীর পাশে দেখা যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগেরই সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল ওরফে ভিপি বাদলকে।   

 


ফজর আলীর সাথে বেশ খাতিরও জমেছে ভিপি বাদলের। সম্প্রতি তাদের দুজনের মধ্যকার ভুরিভোজের একটি ছবি আওয়ামী লীগ অঙ্গণে আলোচনার জন্ম দেয়। প্রশ্ন উঠে, যেখানে সেলিম ওসমান ফজর আলীকে তিরস্কার করছেন, সেখানে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেলিম ওসমানেরই আরেক ঘোষিত প্রার্থী ভিবি বাদলই কিনা সেই ফজর আলীর সাথে এক টেবিলে বসে ভুরিভোজ করছেন !

 


তা যেমন আলোচনার খোরাক হয়েছে, তেমনই গোগনগরের চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে নেতায় নেতায় অর্ন্তদ্ব›দ্ব বিরাজের দৃষ্টান্ত হয়েছে বটে। তবে, কোন মধুতে ওসমান ভাতৃদ্বয় ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে এই বিভাজন? সেই প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল। শেষ পর্যন্ত নৌকা প্রত্যাশী জসিম ও ফজর আলীকে নিয়ে নেতায় নেতায় এই অর্ন্তদ্ব›দ্ব আওয়ামী লীগে নতুন কোন দাবানলের সৃষ্টি হয় কিনা- সেই শঙ্কাও দেখা দিয়েছে তৃণমূলে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর