শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

জেলা যুবলীগের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা

আরিফ হোসেন

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২২  


# ওয়ান ইলেভেনের সময় দুইবার গ্রেফতার হয়েছি : শরিফুল


# আমরা চাইনা হাইব্রিড কাউয়ারা নেতৃত্বে আসুক : লিটন


# তারা আমাকে যেইখানেই রাখেন সেইখানেই থাকার চেষ্টা করবো : ফাইজুল



নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘদিন পর হতে যাচ্ছ জেলা যুবলীগের সম্মেলন। আর এতে করে নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনার কোন কমতি নেই। জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ; আর এই যুবলীগে প্রধান্য পায় যুবকেরা। তবে নারায়ণগঞ্জে যুবলীগে দেখা গেছে এখন আর যুবক নেই অনেক নেতা-কর্মী বয়ষ্ক হয়ে গেছে।

 

 

 

 

আবার অনেক নেতা-কর্মী যুবলীগের পদবি থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। আর এতে করে যুবলীগের অনেক নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগের পদে আসার পর, আওয়ামী লীগের যুবলীগ নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি।

 

 

 

 

আর দীর্ঘদিন কমিটি না হওযার কারনে ছাত্রলীগ থেকে সাবেক হওয়া অনেক নেতা-কর্মী যুবলীগে আসতে চাইলেও কমিটি না হওয়ার কারণে সেটা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।

 

 

 

 

আর এতে করে বিভিন্ন সময় তৃনমূলের নেতা-কর্মীরা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এর কোন সুরহা মেলেনি । তবে দীর্ঘদিনের এই যুবলীগের কমিটি না হওয়ার খরা খুব শীঘ্রই ভাঙ্গতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। জানা যায়, গত ২৬ শে সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের আয়োজনে এক বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দরা জানান নভেম্বর মাসের মধ্যেই হবে জেলা যুবলীগের সম্মেলন।

 

 

 

 

তাই তারা যুবলীগর পদে থাকা জেলা ও থানার নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেন যত দ্রুত সম্ভব ইউনিয়ন ওয়ার্ড কমিটি গুলো আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার। এই কমিটি গুলো করা সম্পন্ন হলে থানা ও জেলার কমিটি নিয়ে বিশাল এক সম্মেলনের ডাক দেওয়া হবে।

 

 

 

 

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এমন ঘোষণার পরপরই যুবলীগে নেতৃত্বে আসতে, এখন থেকেই নেতা-কর্মীরা তারা তাদের যার যার অবস্থান থেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন।

 

 

 

 

আর যুবলীগের জেলা কমিটিতে আসতে তৈরী রয়েছেন একঝাঁক নেতা-কর্মী যারা জেলা কমিটিতে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে  বিভিন্ন সময় প্রচার প্রচারণাও চালিয়েছেন। তবে একটি সূত্রের তথ্যমতে জানা যায়, এই সম্মেলনের জেলা কমিটিতে এ কে এম শামীম ওসমানের অনুসারীরাই এই কমিটিতে বেশিরভাগ স্থান পাবে। কারণ নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমান তিনি শুধু একজন সাংসদই নন, তিনি নারায়ণগঞ্জের একজন প্রভাবশালী নেতাও বটে।  

 

 

 

 

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু ও নারায়নগঞ্জ জেলা আইনজীবী সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ মহোসীন মিয়া এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানী জেলা যুবলীগের সভাপতি হতে চায় এমন গুঞ্জন রয়েছে।

 

 

 

 

তবে অনেক নেতা-কর্মী ধারণা করছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমানের শ্যালক এহসানুল হক নিপুই সম্ভবত হতে পারেন জেলা যুবলীগের আগামীর সভাপতি; যাকে অনেকেই এই গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে দেখতে চায়।

 

 

 

 

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক হতে একঝাঁক নেতা-কর্মী মনের গহীণ কোণে গভীর প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। এদের মধ্যে বেশ আলোচনায় রয়েছেন ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. শরিফুল হক, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এম এ মান্নান সহ প্রমুখ। 

 

 

 

 

এ বিষয়ে নারায়ণঞ্জ ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য আবু মো. শরিফুল হক জানান,‘দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনীতি করি আন্দোলন ,সংগ্রাম, নির্যাতন সবকিছুই করেছি। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এবং ২০০৬ থেকে ২০০৮  ওয়ান ইলেভেনের সময় দুইবার গ্রেফতার হয়েছি।

 

 

 

 

ভাল কিছু প্রত্যাশা করি যেহেতু এমপি শামীম ওসমান সাহেবের রাজনীতি করি; শামীম ভাই যেভাবে সিদ্ধান্ত নিবে সেভাবেই হবে। নিপু ভাইকে সভাপতি এমপি মহাদয় আগেই বলছে, আর আমি সাধারন সম্পাদক প্রত্যাশা করছি। নারায়ণগঞ্জ যুবলীগকে সুসংগঠিত করতে অবশ্যই সৎ, আদর্শিক, প্রগতিশীল নেতৃত্ব দরকার।

 

 

 

 

আসলে রাজনীতিটা প্রত্যেকটা দলের আদর্শ থাকে। আওয়ামী আদর্শ একরকম, বিএনপি আদর্শ এক রকম। আমি মনে করি আওয়ামী আদর্শ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী তাদের এরকম একটা গতিশীল নেতৃত্ব আসুক। যারা আওয়ামী রাজনীতিকে সঠিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।’

 

 

 

 

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে পারে, শামীম ওসমান ভাইয়ের হাতকে শক্তিশালী করতে পারে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়াতে আমাদের প্রত্যাশা বেড়েছে, চাপও বেড়েছে , হতাশাও আছে।

 

 

 

 

কারণ সংগঠন ২ বছর পরপর কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও ২০০৬ এর পর এখন ১৬ বছর পর কাউন্সিল হচ্ছে যদি ২ বছর পরপর কাউন্সিল হতো তাহলে ৮ টা কাউন্সিল হতো এবং ৮ টা সভাপতি সেক্টেটারী বের হইতো।

 

 

 

 

এখন মনে করেন অনেকেই নেতৃত্বর জন্য আমরা যারা বিগত সময় ৯৫ সাল থেকে রাজনীতি করছি। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য এখনো ছাত্রলীগের পরিচয় দিতে হয় অবশ্য এখন আর দেই না। আর দীর্ঘ রাজনীতিতে এটা সবারই প্রত্যাশিত।’

 

 

 

 

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা যুবলীগর সাধারন সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম জানান, ‘আমদের যে জেলার নেতা আছে কাদির ভাই, বাদল ভাই এবং আমাদের থানার নেতারা  যারা আছেন তারা আমাকে যেইখানে রাখেন সেইখানে থাকার চেষ্টা করবো।

 

 

 

 

আমি মনে করি পুরান-নতুন মিলিত করে এবং তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব থেকে সংগঠন গুলা করা হয়; জেলাটা করা হয়, তাহলে খুব শক্তিশালী হবে। আমাদের সাবেক ছাত্রলীগ আছে এবং থানার যুবলীগ আছে বিভিন্ন থানা মিলিত করে কমিটিটা করলে অনেক শক্তিশালী হবে।

 

 

 

 

আমাদের যুবলীগের প্রত্যেকটি থানার কমিটিগুলো আছে সবগুলোই শক্তিশালী এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরাও আমাদের এই যুবলীগের সংগঠনের সুনাম করে গেছেন। আশা করি আমাদের এমপি শামীম ওসমান ও কাদির ভাই বাদল ভাইয়ের নেতৃত্বে একটি সুন্দর কমিটি হবে।’

 

 

 

 

এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা লিটন জানান, ‘আমরা অবশ্যই চাই রাজপথে যারা রাজনীতি করেছেন, যারা রাজপথের কর্মী যারা রাজপথ থেকে উঠে এসেছে তারাই নেতৃত্বে আসুক।

 

 

 

 

আমি যেহেতু ছাত্রলীগ করেছি, যুবলীগ করেছি, মহানগর কৃষক লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলাম। আমি চাই যারা দলে নিবেদিত কর্মী, যারা দলের জন্য প্রাণ, যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসে, যারা শেখ হাসিনার প্রাণ, একেএম শামীম ওসমানের রাজনীতি করে যারা শুধুই আওয়ামী লীগকে ভালবাসে রাজপথ থেকে উঠে আশা নেতৃত্বকে আমরা অবশ্যই আশা করেছি এবং করি।’

 

 

 

 

এখন তো অনেক কথা বলাই যাচ্ছেনা কার মাধ্যমে, কে নেতা হচ্ছে, কাউকে ধরে; যে বিষয়গুলো পত্রিকায় বারবারই আসে। আমরা চাইনা কাউয়া হাইব্রিডিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগে আসুক। আমরা চাই সবগুলোতেই দলের নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা আসুক, রাজপথের কর্মীরা আসুক, এটা আমরা আশা করি।  এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর