মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

মাঠে নামছে বিএনপি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪  

 

দীর্ঘদিন যাবৎ ক্ষমতার বাহিরে থাকা দেশের সবচাইতে বড় বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। নির্বাচন ঠোকানোর কঠোর আন্দোলন চলাকালীন সময়ে দফায় দফায় বিভিন্ন মামলায় জর্জরিত হয়ে আবার অনেকে কারাজ্ঞাপন করে এখনো অনেকে জামিন বা বিভিন্ন মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন না আসায় বিপাকে রয়েছেন আবার আত্মগোপনে ও রয়েছেন। এর মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হলো সংযমের মাস মাহে রমজান।

 

এই রমজানে বিএনপি আন্দোলন ছেড়ে মামলায় জর্জরিত হওয়া ঝিমিয়ে পরা নেতাদের চাঙ্গা করতে কয়েক দফায় ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা করেছেন। তা ছাড়া দুস্থদের মাঝে চলছে ঈদ সামগ্রী বিতরণ। রমজান মাসেও সারা দেশেই বিএনপির নেতাকর্মীরা ইফতার রাজনীতির মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন। যাকে ঘিরে মামলায় জর্জরিত হওয়া নেতাকর্মীরাও ব্যাপক রূপে উজ্জীবিত ও সক্রিয় হওয়া শুরু করেছেন।

 

তা ছাড়া বর্তমানে ‘টক অব দ্যা’ টাউনে পরিণত হয়েছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙ্গার ঘটনা। যা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলেও বর্তমানে ঈদকে ঘিরে নিশ্চুপ হয়ে পরেছেন। কিন্তু তারা বর্তমানে বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে বক্তব্যে দিচ্ছেন ঈদের পরপরই ম্যুরাল ভাঙ্গার সর্বোচ্চ আন্দোলন শুরু হতে যাচ্ছে যা নিয়ে ঈদের পরপরই নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।

এদিকে নেতাকর্মীরা ও তাদের আস্থার আস্থাভাজন জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙ্গার প্রতিবাদ করতে কঠোরভাবে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে যার কারণ হলো নারায়ণগঞ্জে এটাই ছিলো জিয়াউর রহমানের সর্বশেষ স্মৃতি। তাদের ভাষ্য হলো নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নাম মুছে ফেলার জন্যই মূলত এই লজ্জাজনক কাজটি করা হয়েছে।

 

ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সাংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে এই ম্যুরাল ভাঙ্গার পিছনে বিএনপির নেতাকর্মীরা দায়ী করলে ও শামীম ওসমান উল্টো তাদেরই দায়ী করছেন। এদিকে গত বছর ঈদের পর ঢাকঢোল পিটিয়ে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিলে ও তেমনই ভাবে আন্দোলনের দেখা না মিলেনি এবার ও এই আন্দোলন কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সেটাই দেখার বিষয়।

 

সূত্র বলছে, দেড় যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতায় নেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দূর্নীতির মামলায় প্রায় তিন বছর জেলে থাকার পর বর্তমানে অসুস্থতার কারণে তাকে প্যারলে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান কিন্ত তিনিও মামলার কারণে দেশে আসতে পারছে না। যার কারণে নেতাকর্মীদের ভালো কোন দিকনির্দেশনা ও দিতে পারছে না।

 

যার কারণেই বিএনপির আন্দোলনের হাতের ফাঁকা দিয়েই বেড়িয়ে গেলো দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন। ওই সময় ও বিএনপির নেতাকর্মীরা ঈদের পরপরই কঠোর রূপে নামার হুঁশিয়ারি দিলে ও শেষ পর্যন্ত দেখা মিলে স্থবিরতার ছায়া। এবার ও ঈদের পর কতটুকু রূপ নিয়ে আন্দোলন করবে বিএনপি তা নিয়ে ও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

 

গতকাল রোববার (৮ এপ্রিল) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বিএনপি নির্বাচন ঠেকাতে, আন্দোলন করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন তো উন্মুক্ত ছিল। নির্বাচনে গেলে বিএনপির ভরাডুবি হবে বলেই তারা নির্বাচনে যায়নি। খালেদা জিয়ার জন্য মির্জা ফখরুল ৫০০ নেতাকর্মী জড়ো করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আইনি লড়াইয়েও ব্যর্থ হয়েছে, মুক্তির আন্দোলনেও ব্যর্থ হয়েছে।

 

নতুন করে আন্দোলন কবে কোন বছর, কোন ঈদের পর, কোন পরীক্ষার পর? গত ১৫ বছর আন্দোলনের হাঁকডাক বারবার শুনেছি। বিএনপির আন্দোলন করার শক্তি সামর্থ্য সবই তারা হারিয়েছে। বিএনপি আন্দোলন করতে চাইলে নেতাকর্মী পাবে না। তাদের নেতাকর্মীরা হতাশ। তারেক রহমানের ওপর হতাশ। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ সদস্য শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে কোন ভাবেই পাত্তা দিচ্ছেন না।

 

তিনিও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাকর্মীদের নানাভাবে গালমন্দ করছেন আর সকলকেই বলে যাচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীদের আমি কোন রাজনীতিবিদ হিসেবে মনেই করি না। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি রাজপথে না থাকলেও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা ও শামীম ওসমানের বক্তব্যের পাল্টা বক্তব্যে দিয়েই শহর অনেকটাই স্বগরম রেখেছে। এখন ঈদের পর কোন রূপে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলন চালায় যেমনটা ভাবনা ও তেমনটাই উদ্বেগ কাজ করছে বিএনপিসহ সকল নেতাকর্মীদের মাঝে। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর