মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

উপজেলা নির্বাচনে আটকে আছে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৪  


# রমজানে কথা থাকলে ও হয়নি ৩ ইউনিটের কমিটি পূর্ণাঙ্গ
# মাকসুদের টাকা খেয়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গতে সভাপতি হিরণের বাধা

দীর্ঘ দেড় যুগের ও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাহিরে থাকা দেশের সবচাইতে বড় বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন ঠেকাতে কঠোর আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামলে বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও মামলার শিকার হতে থাকেন। যাকে ঘিরে টানা ৪ মাসের ও অধিক সময় আত্মগোপনে ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা যার কারণে অনেকটাই ছন্নছাড়া হয়ে পরেছিলেন দলটি।

 

 

যাকে ঘিরে দলটিকে আবারো রাজপথমুখী করতে পবিত্র রমজান মাসে মাসব্যাপী ইফতার রাজনীতির মধ্যে দিয়ে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমের গতিতে আরো বৃদ্ধি করতে দফায় দফায় ইফতার পার্টির মাধ্যমে আলোচনা সভা অবহৃত রেখেছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।

 

 

তার পাশাপাশি মহানগর বিএনপির আওতাধীন মূল ২টি থানা ও একটি উপজেলার নেতাকর্মীদের রাজপথের গতি বাড়াতে চাঙ্গা করে তুলতে ঈদুল ফিতরের পূর্বেই সদর থানা, বন্দর থানা, বন্দর উপজেলা বিএনপিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নানা পদক্ষেপ থাকলে ও আগামী ৪ মে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে পূর্ণাঙ্গ কমিটির কার্যক্রম ভিতরে ভিতরে স্থগিত আছে বলে শোনা যায়।

 

 

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সর্বশেষ নির্দেশনা হলো যদি বিএনপির কোন নেতা বা কর্মী এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিস্কৃত করা হবে। তার পরে ও বন্দর উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল ও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।

 

 

যাকে ঘিরে বন্দরে বিএনপির বড় একটি অংশ তার হয়ে কাজ করছেন অপর দিকে জাতীয় পার্টির নেতা ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ ও প্রার্থী হয়েছেন। এই মাকসুদের পক্ষে ও বিএনপির একটি অংশ কাজ করছেন বলে ও শোনা যাচ্ছে।

 

 

এদিকে বন্দরের একাধিক নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেছে, রমজানেই বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আলোচনায় বন্দর বিএনপির মধ্যে একটি আমেজের দেখা মিললে ও ঈদুল ফিতর অতিবাহিত হলে ও সেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় আবারো ঝিমানো ভাব দেখা যাচ্ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে তা ছাড়া ১১ মাস যাবৎ তিনটি ইউনিটের কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা দিধাদ্বন্দ্ব।

 

 

এদিকে উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতা মাকসুদের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করছেন বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ। এমনকি কয়েক দফায় মাকসুদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তিনি উপর পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বন্টন করে আত্মস্বাদ করার সংবাদ ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখা গিয়েছিলো এমনি বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী ও শোনা গেছে।

 

 

যাকে ঘিরে হিরণকে বন্দর বিএনপির বিষফোঁড়া বলছে নেতাকর্মীরা তা ছাড়া এই হিরণের নানা বেখেয়ালী পনায় ইফতার মাহফিলের নামে বন্দর উপজেলা থেকে টাকা কালেকশন করে ও হয়নি বন্দর উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিল। যাকে ঘিরে হিরণ নানাভাবে পায়তারা করে নেতাকর্মীদের একত্রিত রাখতে হতে দিচ্ছে না পূর্ণাঙ্গ কমিটি যার কারণে বর্তমানে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

 

 

নির্বাচনের পরপরই সদর-বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আশঙ্খা রয়েছে। এদিকে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা ইউনিট কমিটিগুলোকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে বড় আকারে ধারণ না করায়। জিয়াউর রহমানের মুর‌্যাল ভাঙ্গা নিয়ে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি বলে বলছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

 

 

দলীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘ ২৭ বছর জমকালো আয়োজনে গত বছরের (১২ জুন) সদর থানা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান।  একই বছরের (৯ জুন) বন্দর থানা বিএনপির দ্বি বার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

 

সম্মেলনে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে ২৪ ভোট পেয়ে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন শাহেনশাহ ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন নাজমুল হক রানা। একই বছরের (১৩ জুন) উৎসব মুখর পরিবেশে বন্দর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও ১৩ ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন হারুন অর রশিদ লিটন।

 

 

এই ৩টি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গত ১১ মাসে ও পূর্ণাঙ্গ হয়নি যার কারণে কঠোর আন্দোলনে বন্দর উপজেলা ও বন্দর থানা বিএনপির ভূমিকা বেশি একটি চোখে পরেনি। তা ছাড়া হরতাল ও অবরোধে বন্দরে ছিলো না কোন প্রকারের আন্দোলণ। যার মূল কারণ হিসেবেই বলা চলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অভাব, কারণ কেউ পদে না থাকলে সংগঠনের জন্য রাজপথে জীবনযুদ্ধ করতে রাজি হবে না।

 

 

এদিকে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে কয়েক দফায় বন্দরে ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের জাগ্রত করতে দেখা গেলে ও হঠাৎ শেষ সময় এসে কেন বন্দর উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিল ও মহানগরের আওতাধীন ৩টি ইউনিটের কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ করতে পারলেন না তা নিয়ে ও চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

 

 

তা ছাড়া কিছুদিন পরপরই সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আসতে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে ব্যাপক কর্মসূচি এর আগে কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ হলে আন্দোলনে মহানগরের ভূমিকা বিগত দিনগুলো থেকে আরো কঠোর হতো বলে মনে করছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। অপর দিকে স্থানীয় বহু নেতাকর্মীর ভাষ্য যেহেতু বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ।

 

 

যাকে ঘিরে তিনি এখন একটু নিশ্চুপই আছেন তা ছাড়া উনি যখনই কোন সমস্যার সম্মূখিন হতে থাকেন তখনই বিভিন্ন রোগের বাহানা দিয়ে হাসপাতালে আছি বলে কথা কাটিয়ে দেন। এবার ও উনি কমিটি পূর্ণাঙ্গর বাধা হিসেবে পা ভাঙ্গার ইস্যু দেখিয়ে বাসায় অবস্থান করছেন। যেহেতু উনি বন্দর উপজেলার নির্বাচনকে ঘিরে মোটা অংকের টাকা খেয়েই ফেলেছেন। সেই টাকাকে হালালে রূপ দিতে উনি উপজেলা নির্বাচনের পরপরই তাদের ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি চান।

 

 

আর এই কমিটির পূর্ণাঙ্গর কারণে আটকে আছে আরো বাকি দুই ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন। এর আগে ৩ টি ইউনিটের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা সভা করেছেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে বলা হয়েছিলো যারা আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে সেদিকে লক্ষ্য করেই বিভিন্ন লিষ্টসহ নানা খসড়া হলে ও এটা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে এটা নিয়ে ও চলছে আলোচনা।

 

 

কারণ যেহেতু টাকা বিনিময়ে একটি উপজেলার সভাপতি জাতীয় পার্টির নেতার জন্য প্রকাশ্যে কাজ করতে পারে তাহলে কিভাবে তাদের হাতে যাচাই বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতা নির্বাচিত হবে তা নিয়ে রয়েছে তৃণমূলে নানা প্রশ্ন।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর