মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

প্রশ্নবিদ্ধ মান্নান-বাবু ওমর

এম মাহমুদ

প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২৪  

 

সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনীতিতে আবারও বিতর্কের ঝলকানি। আওয়ামী লীগ নেতার টাকায় বিএনপির ইফতার মাহফিল এমন কান্ডে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলের সমর্থকরাই রীতিমতো চমকে উঠেছেন। এছাড়া এই ইফতার মাহফিলে অর্থের দাতা আওয়ামী লীগ নেতা আসন্ন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাবুল ওমর বাবু এবং এই মাহফিলের আয়োজক অর্থের গ্রহীতা সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে ইমেজ সংকটে পড়েছেন।

 

যার কারণে আর্থিক লেনদেনের বিষয় ধামাচাপা দিয়ে উত্তরণের জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করলেও রাজনীতিতে এমন লোমহর্ষক ঘটনার বিতর্ক কোন মতেই পিছু হটছে না। এতে করে আওয়ামী লীগে বাবুল ওমর বাবু এবং বিএনপিতে আজহারুল ইসলাম মান্নানের রাজনীতি এখন পুরোপুরি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে।

 

সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) জামপুরের বস্তলে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই ইফতার মাহফিলটি সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির অর্থায়নে হওয়ার কথা থাকলেও ইফতার মাহফিলটি সমাপ্ত হওয়ার পর পরই চারদিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে এই ইফতার মাহফিলটি আওয়ামী লীগ নেতা আসন্ন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর অর্থায়নে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইফতার মাহফিলকে ঘিরে এমন কান্ড ঘটছে এমনটি আঁচ করতে পেরে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী তথা যে ইউনিয়নে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে সে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আল মুজাহিদ মল্লিক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন এই ইফতার মাহফিল বয়কট করেন।

 

তবে এই ঘটনাকে ঘিরে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান প্রশ্নবিদ্ধ হলেও তিনি সুস্পষ্ট মতামত কোন মাধ্যমেই প্রকাশ না করলেও তার পিএস সেলিম হোসেন দিপু গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বাবু ওমরের কাছ থেকে টাকা এনে ইফতার পার্টি করছি এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল, মান্নান সাহেবের টাকা কম আছে নাকি যে বাবু ওমরের কাছ থেকে টাকা এনে ইফতার মাহফিল করতে হবে। যারা এ তথ্য দিয়েছে তারা মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে।

 

এর পরের দিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজহারুল ইসলাম মান্নান এই ঘটানা সম্পর্কে বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ স্বরূপ বলেন, আমরা গতকাল ও আজ কিছু স্থানীয় অনলাইন ও পত্রিকায় সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিল নিয়ে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি ও সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের বিশেষ সহকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রচার করছে যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই মিথ্যা বানোয়ার সংবাদ দেখে আমরা বিব্রত ক্ষুব্ধ।

 

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ইফতার আয়োজন বানচাল করতে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তারা সাংবাদিক ভাইদের ব্যবহার করে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। বিএনপির কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এসব নির্বাচনে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ অথবা প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না যদি কেউ অংশগ্রহণ করে তাহলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এখন কেউ কেউ সাংবাদিকদের মিথ্যা মনগড়া তথ্য দিয়ে সাংবাদিকদের দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন এবং হীন স্বার্থে বিএনপি রাজনীতিকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে এবং সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি নেতা কর্মীদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াতে চায় যা সোনারগাঁয়ে আদৌ সম্ভব নয়। সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির বিগত সময় থেকে আজ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ ছিল আছে। আওয়ামী লীগের চক্রান্তে এসব মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার আমাদের কিছু নেতাকর্মী বিভ্রান্ত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি, কিন্তু এই বিভ্রান্তি আমরা কাটিয়ে উঠে আগামীতে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বো ইনশাআল্লাহ। সোনারগাঁও উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি'র অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলবো কোন মিথ্যা গুজব বানোয়াট সংবাদ আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ আমাদের দলকে বিভাজন ও কোন্দল সৃষ্টি করতে মরিয়া চেষ্টা করছে কারণ আওমী লীগ জানে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই আগামীর বাংলাদেশ হবে জনগণের পছন্দের দল বিএনপির। সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা বানোয়াট ষড়যন্ত্রমূলক প্রকাশিত সংবাদের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

 

কিন্তু তার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই ধরণের কান্ড করেছে এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সত্য নয় বলে এমনটা দাবি করেন। তবে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে সেদিনই এই ঘটনার সম্পর্কে সত্যতা নিশ্চিত করতে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পরই নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেছেন, জামপুর ইউনিয়নে বিএনপির ইফতার মাহফিল সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগেই হয়েছে। কিন্তু আমরা যতটুকু নিশ্চিত হয়েছি অন্যদের অর্থায়নে এই অনুষ্ঠান হয়েছে এটা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, আর এই অর্থায়ন আমাদের বিরোধী শিবির থেকেই এসেছে নির্বাচন করবে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করে দিবে এমন কথা দিয়ে মান্নান ভাই তার নিকট হতে টাকা এনেছে। তবে আজহারুল ইসলাম মান্নান নিজেকে নির্দেশ দাবি করলেও এখনো প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যাচ্ছেন তিনি।

 

অপরদিকে আসন্ন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাবুল ওমর বাবু বিএনপি থেকে সমর্থন পেতে আর্থিক সহযোগীতা করে বিতর্কিত হলেও তিনি তার নেতাকর্মীদের মাধ্যমে দাবি করাচ্ছে তিনি এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নন। তার একজন কর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখ করেন, বাবুল ওমর বাবুর একজন সমর্থক সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন মিথ্যা চক্রান্ত করে কি দমানো যায় সবকিছু অপেক্ষা করেন ইনশাআল্লাহ সময় সব কিছু বলে দিবে এই রকম ভুল নিউজ করে কখনো পরিশ্রমী ব্যক্তিকে দমাতে পারেনি আর পারবেনও না নিউজ সোনারগাঁ ২৪ কিসের উপর ভিত্তি করে এই নিউজ এটাও জানান।

 

যে টাকা নিছে সে তো স্পষ্টই না করেছে এবং বলেছে যে আযহারুল ইসলাম মান্নান সাহেব এখনো সেইরকম দুর্বল হয় নাই যে অন্যের টাকা নিয়ে নেতাকর্মীদের খাওয়াতে হবে। এরপরেও এই রকম নিউজ করাটা নিশ্চিত টেবিলের নিচ দিয়ে পকেটে কিছু গেছে অবস্থা এখন মানুষ সবকিছুই বুজতে পারে কারণ বাবু ওমর একজন পরিক্ষিত আর ত্যাগী নেতা উপজেলা নির্বাচন এ বাবুল ওমর বাবু ভাই ইনশাআল্লাহ জয়ী হবেন যত ষড়যন্ত্র আর বাধা আসুক শুভ কামনা প্রিয় নেতা আপনার জন্য।

 

সোহেল সাউদ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সোনারগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগ। তবে এই বিষয়ে এখনো বাবুল ওমর বাবুর কাছ থেকে সুস্পষ্ট কোন রকম মন্তব্য পাওয়া যায়নি এবং এই ঘটনার সাথে তিনি সম্পৃক্ত নন এটাও তিনি নিশ্চিত করেননি। এছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাবুল ওমর বাবুর এমন কান্ডকে বাঁকা চোখে দেখে নানা রকম তীর্যক মন্তব্য করলেও এখনো তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে এই ঘটনার ফলে বাবুল ওমর বাবু এই ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইমেজ সংকটে পড়েছেন। এস.এ/জেসি
           
 

এই বিভাগের আরো খবর