মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

সদর উপজেলা নির্বাচন অনিশ্চিত

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৪  


আগামী ৮ মে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের জন্য দিনক্ষন নির্ধারণ করা হয়েছে । সেই অনুযায়ী এই উপজেলার সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারদের সাথে গণসংযোগ করে নিজেদের মত করে প্রস্তুতিও নিয়েছে। এমনকি নাম প্রকাশ না করে এক প্রার্থী অপর প্রার্থীকে ইশারা ইঙ্গিতে ঘায়েল করার জন্য মন্তব্য করছেন। এতে করে সদর উপজেলা সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

 

 

যদিও তারা দুজনেই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারী। এই নির্বাচন নিয়ে তাকে যেন কোন ধরনের বিব্রত করা না হয়। তাছাড়া এমপি শামীম ওসমান কনফার্ম করে বলেছেন সদর উপজেলা নির্বাচন হবে না। তার এই মন্ত্যব যেন এখন সত্যি হতে যাচ্ছে। কেননা ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন ২২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রাখার নির্দেশনা এসেছে।

 

 

জানা যায়, জেলা নির্বাচন অফিসার মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে উল্লেখ্য করা হয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৯ এপ্রিল স্মারক নং ১৭.০০,০০০,০৪৭,৬৩,০৩৭,২৪,১৭৩ প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সর্ব সাধারনের জন্য জানানো যাচ্ছে আপিল বিভাগ কর্তৃক সিএমপি নং ৬৯৫/২০২২ এর ২৭ মার্চ ২০২৪ তারিখের আদেশ প্রতিপালনার্থে ৮ মে ঘোষণা হওয়া সদর উপজেলা নির্বাচন ২২ মে পর্যন্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।

 

নির্বাচন কমিশন সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংশ্লিষ্ঠ সকল দপ্তরে এই স্মারক লিপি দেয়া হয়। এদিকে সর্বশেষ ২০০৯ সনে জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তিতে মামলা জটিলাতার কারণে দীর্ঘ দিন নির্বাচন আটকে ছিল। কিন্তু সকল জল্পনা কল্পনা কাটিয়ে নির্বাচন কমিশন সদর  উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন।

 

 

তবে তফসিল ঘোষনা হওয়ার পরেও এই নির্বাচনকে আবারও অন্ধকারে ধাবিত করার জন্য পূর্বের মামলা আপিল করা হয়েছে বলে জানান একাধিক সুত্র। এদিকে ৩০ মার্চ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সদর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিষ্ফোরক মন্তব্য করেন। যা নিয়ে তৃনমুলের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে নেতা কর্মীদের মাঝে আলোচনা বইছে।

 

 

কেননা তার মন্তব্যের পরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হতাশ হয়ে রয়েছেন। সেই সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের নেতার বক্তব্যের পরে হতাশ হয়ে নির্বাচনের মাঠে প্রচার প্রচারনাও নেই। সদর উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংসদ শামীম ওসমান বলেন, আমি এই উপজেলা নির্বাচন সিরিয়াসলি নিব। আমি মাঠে থাকবো। যদিও আমার মাঠে থাকার নিয়ম নাই।

 

 

কিভাবে থাকতে হয় আমার জানা আছে। যারাই উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হবেন আমার আপত্তি নাই। তবে আমার কথা একটাই যাকে প্রার্থী দিব সে জয় লাভ করে আসুক। সভার বক্তব্যের শেষের দিকে এসে এমপি শামীম ওসমান বলেন, একটি কথা মনে রাখবেন, আমি কনফার্ম সদর উপজেলা নির্বাচন হবে না। আমি নিশ্চিত নির্বাচন হবে না।

 

 

অপরদিকে রমজানের মাঝামাঝি সময়ে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস এখনকার নির্বচান নাও হতে পারে এমন ইঙ্গিত প্রদান করেন। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে বলেছেন, তাকে নির্বাচন সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন ডেকে বলেছেন তিনিই যেন ২০৪১ সাল পর্যন্ত থাকেন। আবার অনেকে বলাবলি করছে তিনিও ১৫ বছর যাবত চেয়ারম্যানের চেয়ারের মজা পেয়ে যাওয়ায় তা ছাড়তে নাড়াজ।

 

 

আর এজন্য তিনি আবারও নির্বাচন বন্ধের পায়তারা করে পুনরা মামলাটি আপিল করেছে। যা আগামী ২২ এপ্রিল আপিল ডিভিশনের শুনানি রয়েছে। তাই রাজনৈতিক চড়াও হচ্ছে কার ইশারায় এই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পরেও তা আবার আপিল করা হয়েছে। কে পিছন থেকে তা সচল করার জন্য শেল্টার দিয়েছে। তাই বলাবলি হচ্ছে শামীম ওসমানের কথা অনুযায়ী আদালত থেকে সদর উপজেলার নির্বাচন স্থিগিতের আদেশ রয়েছে।

 

 

তবে তা ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। সকল জল্পনা কল্পনা এক মুহুর্তে বিলনী হয়ে যায়। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থী থেকে শুরু করে সকল নেতৃবৃন্দ এখানে নির্বাচন দেয়ার দাবী জানান। তাছাড়া নির্বাচন না হলে ফতুল্লা বাসি উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে। এজন্য এখানকার পানিবন্দি মানুষের কথা চিন্তা করে হলেও নির্বাচন হওয়া দরকার।

 

 

দলীয় সুত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, এছাড়া ফতুল্লা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু মো. শরীফুল হকের নামও গুঞ্জন রয়েছে।

 

 

তাছাড়া বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনও ছেড়ে দিবেন না। উল্লেখ্য প্রথম ধাপে নারায়ণগঞ্জের সদর ও বন্দরসহ সারা দেশের মোট ১৫২ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। ২১ মার্চ নির্বাচন কমিশনের ২৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচন কশিন ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে সদর ও বন্দর উপজেলা নির্বাচন।

 

 

রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল। বাছাই ১৭ এপ্রিল এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ২৩ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর